Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all articles
Browse latest Browse all 222

এই বুঝি বিজ্ঞান অপবিত্র করে দিল সবকিছু

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা


নাটক: অপবিত্র
ভাবানুবাদ, নির্দেশনা: চন্দন সেন
দল: নাট্যআনন
অভিনয়: অসিত, ভদ্রা, সব্যসাচী, চন্দন, শান্তিলাল
রেটিং: চার


'ইনহেরিট দ্য উইন্ড' নাটক অবলম্বনে তৈরি হয়েছে 'অপবিত্র'। মূল নাটক থেকে অনুবাদ করেছেন চন্দন সেন, পরিচালনাও তাঁরই। ১৯৬০ সালে লেখা লরেন্সের সেই নাটকের প্লটের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সত্য ঘটনা। ১৯২৫ সালে উত্তর আমেরিকার এক স্কুলশিক্ষক ছাত্রদের ক্লাশে ডারউইনের তত্ত্ব পড়ান। আর এই বিবর্তন তত্ত্ব পড়ানোর কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। চোর, ডাকাত, রাষ্ট্রদ্রোহীর বাইরে এই রকম কোনও কারণেও যে একজন মাস্টারমশাই গ্রেপ্তার হতে পারেন তা সাধারণ মানুষের প্রায় অজানা ছিল। শিক্ষক বারট্রাম কেটস-এর হয়ে লড়তে আসেন উকিল ডিফেন্স অ্যাটর্নি হেনরি ড্রামন্ড। খবর প্রকাশ করতে এগিয়ে আসেন সাংবাদিক ই কে হর্নবেক। অ্যাডভোকেট ম্যাথিউ ব্র্যাডি শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে লড়েন। পাশাপাশি, পাদ্রী ব্রাউন নিন্দায় মুখর হয়ে ওঠেন। উকিল ড্রামন্ডের ভূমিকায় সব্যসাচী চক্রবর্তী। আর তাঁর বিপরীতে অ্যাডভোকেট ম্যাথিউ ব্র্যাডির ভূমিকায় অসিত বসু। সাংবাদিক চন্দন সেন এবং পাদ্রী শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়।

লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, নাটকটাকে অহেতুক এদেশের মতো, এই সময়ের মতো করে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। একই গল্প এবং একই চরিত্র রেখে দেওয়া হয়েছে। মনে রাখা দরকার, হলিউডে আলাদা আলাদা সময়ে নাটকটিকে ভিত্তি করে তিন বার সিনেমা বানানো হয়েছে। অর্থাৎ পাল্টে যাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাটকটির তাৎপর্য আমেরিকায় ফুরিয়ে যায়নি। এদেশেও কি তাৎপর্য আছে? অবশ্যই আছে, কিন্তু জোর করে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার কোনও অতিরিক্ত প্রয়াস নেওয়া হয়নি। কিন্তু যদি মন দিয়ে নাটক দেখা যায়, তাহলে ডায়ালগের ফাঁকে ফাঁকে খুব সূক্ষ্মভাবে বানর সেনার কথা কিংবা পুরাণের রেফারেন্স যে সেলাই করে দেওয়া হয়েছে তা বুঝতে পারা যাবে। তাছাড়া নাটকে ডিফেন্স ল-ইয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন যে বিজ্ঞানের তত্ত্ব, সত্য পড়ানো হলে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন আইন কেন রাখা হয়েছে দেশে? এই প্রশ্নটি নিঃসন্দেহে মারাত্মক। তাছাড়া সিবিআই পুলিশকে গ্রেপ্তার করবে নাকি পুলিশ সিবিআইকে, এই নিয়ে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন গ্রেপ্তারির তাৎপর্য তো হারিয়ে যায়নি! তাই না!

বিরাট কিছু আয়োজন কিংবা গবেষণা করা হয়নি সেট বা আলো নিয়ে। খুব ট্র্যাডিশন্যাল পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। বরং অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ডায়ালগের উপর। টানটান সংলাপ, কখনও সখনও স্যাটায়ারের খোঁচা আগাগোড়া মনোযোগ টেনে রেখে দেয়। পাদ্রী হিসেবে শান্তিলাল একটা মেজাজ ধরে রেখেছেন। পাদ্রী যেন সব বুঝতে পারছেন কিন্তু এতোদিন যে বিশ্বাস নিয়ে বেঁচেছেন তা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। চন্দন সেনের সাংবাদিকসুলভ খোঁচাগুলোও চমৎকার। ভদ্রা বসুর শান্ত অভিনয় ভীষণ সুন্দর। তবে নাটকের সেরা অসিত বসু। তিনি মঞ্চে যতক্ষণ থেকেছেন এমনকী বিপরীত পক্ষের উকিল সব্যসাচীকেও ফিকে লেগেছে। কখনও সখনও ডায়ালগ ছাড়া স্রেফ একটা লুক কিংবা মুভমেন্টেও তিনি মাত করেছেন। তাঁর জন্য এ নাটক দেখা দরকার অভিনয় শিক্ষার্থীদের।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 222

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>