Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all 222 articles
Browse latest View live

পাগলীকে ঘরে ফেরালে বোনকে বিয়ে করবে কে

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

পাগলীকে ঘরে ফেরালে বোনকে বিয়ে করবে কে
নাটক: গভীর অসুখ
রচনা: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
নির্দেশনা: সীমা মুখোপাধ্যায়
দল: শিল্পীসংঘ
অভিনয়: সৌমিতা, স্নেহাশিস, শঙ্কর, অনন্য, সুরজিৎ, অরুন্ধতী, স্মৃতি

আপাতভাবে মানসিক হাসপাতালের এক রোগীর কাহিনি। কিন্তু সেটুকু শুনে চোখ-কান বন্ধ করে ফেললে চলবে না। যাঁরা মানসিক অসুস্থতার শ্রুশ্রূষা করতে এখানে আসেন তাঁরা সুস্থ হওয়ার পর তাঁদের পরিণতি কি? পরিবার কি তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেন। নাকি ভাবেন এ 'আপদ' ঘরে না ফিরলেই ভালো। এমন একটা সম্পূর্ণ অন্য রকম বিষয় উঠে এসেছে 'গভীর অসুখ' নাটকে। খুব সাধারণ জায়গা থেকে শুরু হয়ে ক্রমে একটা থ্রিলারের চেহারা নেয়।

ডঃ সত্যব্রত চক্রবর্তী একটি মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসক। আন্তরিক চিকিৎসা করেন। সেজন্যই হাসপাতালের বিভিন্ন সহকর্মী , কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ লেগেই থাকে। সেখানকার এক রোগিণী ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠে। বাড়ি যেতে চায়। কিন্তু কেউ তাকে নিতে আসে না। সে ডাক্তারবাবুর কাছে এসে জানতে চায় তার বাড়ি থেকে চিঠি এসেছে কি না। ডাক্তার নিজেও একবার তার বাড়িতে চিঠি পাঠান। কিন্তু উত্তর আসে না। বরং মানসীর বাড়ি থেকে এমপি-র কাছে চিঠি যায় যে হাসপাতাল থেকে তাদের নানাভাবে বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন যদি বন্ধ না হয় তাহলে হাসপাতালের ডিরেক্টর ডঃ ভোঁসলে এবং সত্যব্রতর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে তাঁদের সাসপেন্ডও করা হতে পারে।

এখান থেকেই নাটক পলিটিক্যাল মোড় নিয়ে নেয়। ডঃ ভোঁসলে সত্যব্রতকে জানান যে মানসীর বাড়িতে আর চিঠি পাঠআনোর দরকার নেই। কারণ তাহলে তাঁর চাকরি বিপন্ন হবে এবং এমপি রুষ্ট হলে হা,পাতালের জন্য যে গ্রান্টের ব্যবস্থা তিনি করেছেন তা আর পাওয়া যাবে না। সত্যব্রত ভেঙে পড়েন।

সামাজিক সমস্যাটা দেখা যাক। মেয়েটি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে তার বাড়ি পৌঁছে যায়। কিন্তু মেয়েটির বাবা তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যান হাসপাতালে, কারণ পাগল মেয়ের ভার তাঁর পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। সত্যব্রত মানসীর বাবাকে বোঝান। কিন্তু মানসীর বাবা স্পষ্টই জানান যে বংশে পাগল আছে জানলে তাঁর অন্য দুটি মেয়েক কেউ বিয়ে করবে না, তাছাড়া আজীবন একটি অস্বাভাবিক মেয়ের ভার বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। শেষটায় মানসীর কি হল তা নাটকে দেখাই ভালো।

দারুন কোনও সেটের বাহুল্য নেই। আলোর ব্যবহারও আলাদা করে চোখ টানবে না। একা কারও অভিনয়ও মনোযোগ সরিয়ে নেবে না। কিন্তু গোটা বিষয়টা সামগ্রিকভাবে সমাজের অন্ধকার অংশটার উপর আলো ফেলবে। সমস্যাটা বড়ই ভয়ানক!


জেলার জয় এনএসডি রঙ্গমহোৎসবে

$
0
0

ভারাঙ্গম-এ রাজ্যের নির্বাচিত নাটকগুলির খোঁজ নিলেন ইন্দ্রনীল শুক্লা

জেলার জয়জয়কার!

কথাটা আজকাল শোনা যায় মাধ্যমিক আর উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর। কিন্তু তেমনটাই ঘটল দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক জাতীয় নাট্যোৎসব এনএসডি আয়োজিত রঙ্গমহোৎসব-এ।

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত তেরোটি নাটক। সারা দেশ থেকে গোটা পঞ্চাশ নাটক বাছাই হয়। অর্থাৎ প্রায় এক-চতুর্থাংশ পশ্চিমবঙ্গের। রাজ্য থেকে যাওয়া নাটকের বড় অংশই জেলা, শহরতলীর। কলকাতার দলের একচেটিয়া আধিপত্য আর রইল না। গোবরডাঙা, অশোকনগর, মধ্যমগ্রাম, শ্রীরামপুর, নৈহাটীর নাটক মঞ্চস্থ হবে দিল্লির প্রেস্টিজিয়াস মঞ্চে।

জেলার নাটকের মধ্যে রয়েছে গোবরডাঙা শিল্পায়ন-এর 'বোল'। আশিস চট্টোপাধ্যায় রচিত, নির্দেশিত, দীপা ব্রহ্ম অভিনীত নাটকটি এমিল জোলার 'জার্মিনাল' উপন্যাস আশ্রিত। আছে অদ্বৈত মল্লবর্মণ-এর উপন্যাস অবলম্বনে প্রবীর গুহ নির্দেশিত, অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটারের 'তিতাস একটি নদীর নাম'। পার্থসারথি রাহা নির্দেশিত অশোকনগর প্রতিবিম্ব-র 'মৃত্যুসংবাদ'-ও নির্বাচিত। ডাক পেয়েছে শ্রীরামপুর ধ্রুবপদ নাট্যগোষ্ঠী-র 'আরশিনগর'। পার্থ ভৌমিকের নৈহাটী ব্রাত্যজন নাট্যগোষ্ঠীর '২১ গ্রাম' আমন্ত্রিত। ইনারিত্তুর ছবি অবলম্বনে এ নাটক ব্রাত্য বসু রচিত নির্দেশিত। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বোড়ালের নয়ে নাটুয়া-র 'ময়মনসিংহ গীতিকা' দিল্লি যাচ্ছে। নির্দেশনা, অভিনয়ে গৌতম হালদার।

কলকাতার উত্তর নগরপ্রান্তে দমদম-পাইকপাড়া এলাকাও আগুয়ান। ব্রাত্য বসু রচিত, কাঞ্চন মল্লিক অভিনীত-নির্দেশিত 'একদিন আলাদিন'-ও আমন্ত্রিত। থাকছে রাকেশ ঘোষ রচিত, নির্দেশিত, রঞ্জন বসু অভিনীত রূপান্তরকারী আলকাপ-মায়া শিল্পীদের নিয়ে 'মায়ামৃদঙ্গ'। দমদমের নির্বাক অভিনয় অ্যাকাডেমির অঞ্জন দেব পরিচালিত 'হুইল চেয়ার'-ও আমন্ত্রিত।

এছাড়া আছে উত্তর কলকাতার মানিকতলার প্রজ্ঞা কালচারাল সেন্টারের জয়শ্রী ভট্টাচার্য পরিচালিত 'নাইন মাইলস টু গো' (বাঘা যতীনের জীবন ভিত্তিক), দক্ষিণে চেতলা কৃষ্টি সংসদের 'স্টোরি অফ লরি', সীমা মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'রক্তকল্যাণ' (গিরিশ কারনাডের), রঙ্গকর্মীর 'সপ্তপর্ণী' (সাত মহিলা-পরিচালকের)। এটিও একটি বিশেষ ট্রেন্ড যে কলকাতার নাটকগুলির অধিকাংশই মহিলা পরিচালিত।

জেলার জয় প্রসঙ্গে আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে থিয়েটারে আমি ভৌগোলিক ভেদাভেদে বিশ্বাস করি না। কিন্তু এটা দেখেছি যে জেলার কাজ ভালো হলেও তাকে প্রান্তিক করে রাখা হয়। এনএসডি-র বিচারকরা সেটা করেননি বলে আমি কৃতজ্ঞ।' একই সুরে প্রবীর গুহ বলেন, 'ফেয়ার সিলেকশন হয়েছে। জেলার দল সুযোগ পেয়েছে। কলকাতার তকমা আছে বলেই বাজি মেরে দেবো, সেটা হয়নি।'

গৌতম হালদার বলেন, 'কলকাতার অন্য দলের হয়ে কত্তোবার রঙ্গমহোৎসবে গিয়েছি। কিন্তু গত দশ বছরে এই প্রথমবার নিজের দল নয়ে নাটুয়া সুযোগ পেল'। দলের ঠিকানা বোড়াল বলেই কি দেরি? উত্তর না দিয়ে অনেকটা হাসলেন গৌতম। প্রথমবার পরিচালনায় এসে এই উৎসবে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে কাঞ্চন মল্লিক বলছেন, 'সাত বার এই উৎসবে গেছি। কিন্তু এই প্রথম পরিচালক হিসেবে! এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না।'

উৎসবে জোড়া সৌরভ এবং মকরন্দ

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

দ্বিতীয় বর্ষে পা দিল ইন্দ্ররঙমহোৎসব। আয়োজনে পাইকপাড়া ইন্দ্ররঙ্গ নাট্যগোষ্ঠী। আগামী ১১ থেকে ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস এবং মোহিত মৈত্র মঞ্চ, এই দুটি প্রেক্ষাগৃহ মিলিয়ে উৎসব হবে। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ সৌরভ শুক্লা রচিত, নির্দেশিত ও অভিনীত দু'টি নাটক। এবং মকরন্দ দেশপাণ্ডের নাটক যা তাঁর রচিত, পরিচালিত এবং অভিনীত। উৎসবের আহ্বায়ক ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী। এবং উৎসব অধ্যক্ষ ব্রাত্য বসু।

আগামী ১১ নভেম্বর উৎসবের উদ্বোধন অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহে। ওই দিন অভিনীত হবে কালিন্দী ব্রাত্যজনের 'ভোম্বল সর্দার'। রচনা খগেন্দ্রনাথ মিত্র, নির্দেশনায় সুমন্ত রায়। এবং আছে ব্রাত্য বসু নির্দেশিত দু'টি নাটক: 'অদ্য শেষ রজনী' এবং 'মীরজাফর'। প্রথমটি পাইকপাড়া ইন্দ্ররঙ্গ, এবং দ্বিতীয়টি কালিন্দী ব্রাত্যজন প্রযোজিত। সোমবার থেকে উৎসব চলে আসবে পাইকপাড়া মোহিত মৈত্র মঞ্চে। দেখা যাবে ব্রাত্য বসু রচিত 'আমি, অনুকূলদা আর ওরা' এবং 'একদিন আলাদিন', যার নির্দেশনায় যথাক্রমে অভি চক্রবর্তী এবং কাঞ্চন মল্লিক। প্রযোজনায় অশোকনগর নাট্যমুখ এবং আয়োজক দল। উল্লেখ্য, আয়োজক দলের নাটকটি এ বছর এনএসডি-র রঙ্গমহোৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। দেখা যাবে সুজন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালিত, সুমন মুখোপাধ্যায় অভিনীত চেতনা-র নাটক 'ডন-তাকে ভালো লাগে'। পূর্ব-পশ্চিম প্রযোজিত, ব্রাত্য বসু পরিচালিত, দেবশংকর হালদার অভিনীত 'অথৈ জল' দেখতে পাওয়া যাবে।

শেষ তিনদিনে থাকছে চমক। পর পর দু'দিন থাকছে সৌরভ শুক্লা রচিত, নির্দেশিত, অভিনীত দুটি নাটক। 'টু টু ট্যাঙ্গো, থ্রি টু জাইভ' এবং 'বর্ফ্'। উৎসব শেষ হবে মকরন্দ দেশপাণ্ডের 'স্যার স্যার সরলা' দিয়ে। গতবার সৌরভ শুক্লা এসেছিলেন, এবারও কেন? উৎসব আহ্বায়ক ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী হেসে বলেন, 'নাট্যমোদী বন্ধুদের দাবিতে বলতে পারেন। আগের বার শুধু সৌরভ শুক্লা কেন, শরমন যোশি, পরেশ রাওয়াল, সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তি-ও অভিনয় করে গিয়েছেন। সব নাটকেই ফুল হাউস ছিল। কিন্তু সৌরভের 'বর্ফ্'-এর শোয়ে যা হয়েছিল তা অভূতপূর্ব। মোহিত মৈত্রের ছ'শো সিট ভরে যাওয়ার পর এক্সট্রা সিট এবং সিঁড়ি মিলিয়ে প্রায় সাতশো মানুষ নাটক দেখেছিলেন। এই উন্মাদনা এবারও থাকবে আশা করছি।'

চলে গেলেন 'থিয়েটারওয়ালা' বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চলে গেলেন প্রখ্যাত অভিনেতা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী। শুক্রবার ভোর রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

বেশকিছুদিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। ভর্তি ছিলেন শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাংলা থিয়েটারে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে মারিচ সংবাদ নাটকে তাঁর অভিনয়। তাঁর পরিচালিত বাঘু মান্নাও এক অনবদ্য সৃষ্টি।

বিপ্লবকেতন চক্রবর্তীর নাট্যজীবন শুরু চেনতা নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে। পরে তিনি তৈরি করেন নিজের দল। থিয়েটারওয়ালা। তাঁর হাতেই অভিনয়ে হাতে খড়ি তাঁর তিন কন্যা সুদীপ্তা, বিদীপ্তা ও বিদিশার। বর্তমানে তাঁরা প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। নাটক ছাড়াও সিনেমা ও সিরিয়ালে অভিনয় করেও দর্শকমনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত বাংলা নাট্য জগত্‍‌ ও টলি পাড়া।

রেখার ‘বসন্তসেনা’ দেখিইনি চোখে, শুনেছি বটে

$
0
0

এমন কথা গৌতম হালদারই বলতে পারেন। শূদ্রকের নাটক অবলম্বনে তাঁর ‘মাটির গাড়ি মৃচ্ছকটিক’ সম্পর্কে জানলেন ইন্দ্রনীল শুক্লা

‘নাটকের প্রথম দৃশ্যটা কেমন জানো? রাজার লম্পট শ্যালক এক পতিতাকে ধাওয়া করে ছুটছে, তাকে পেলেই ধর্ষণ করবে বলে। সেই কুষাণ যুগে শূদ্রকের লেখা একটা সংস্কৃত নাটক যাতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে এক গণিকা, ভাবা যায়... ’ রীতিমতো উত্তেজিত গৌতম হালদার। গত দশ বছরে প্রথমবার নিজের দল নয়ে-নাটুয়া-র ‘ময়মনসিংহ গীতিকা’ নিয়ে আগামী জানুয়ারির শেষের দিকে এনএসডি আয়োজিত ভারত রঙ্গমহোৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে তিনি যারপরনাই খুশি। ব্রাত্য বসু রচিত, পরিচালিত কালিন্দী ব্রাত্যজনের ‘মীরজাফর’ নাটকে নামভূমিকায় তাঁর অভিনয়ও যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। তারই পাশাপাশি, আগামী ৯ ডিসেম্বর দলের জন্মদিনে অ্যাকাডেমিতে প্রথমবার মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘মৃচ্ছকটিকম’ অবলম্বনে ‘মাটির গাড়ি মৃচ্ছকটিক’। পরিচালনায়, রাজার শ্যালকের ভূমিকায় গৌতম হালদার। বসন্তসেনা দ্যুতি হালদার।

কেন এই নাটক? গৌতম বলেন, ‘আসলে নাটকের গড়নটাই এতো অন্যরকম যে সে কারণেই এটা অত্যন্ত চর্চিত নাটক। গ্রাসরুট থেকে রাজা অবধি নানা চরিত্র নাটকে। জুয়াড়ি, পুলিশ, ভিখিরি, সন্ন্যাসী, চাকর, গাড়োয়ান, পরান্নভোজী ব্রাহ্মণ, গণিকা... কে নেই! কাজটা করতে করতে অনেকবার মনে হয়েছে শেক্সপীয়ারের অনেক নাটকের সঙ্গে তুলনীয় চরিত্রগুলো।’ নাটকের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সমসময়ের কোনও মিল আছে? ‘সারা পৃথিবীর দেশ-বিদেশের অস্থির সময়ের সঙ্গেই মিল রয়েছে নাটকের। নাটকে দেশের মানুষ রাজনৈতিক যে শাসনব্যবস্থা চলছে তাতে খুশি নয়। ভিতরে ভিতরে বিদ্রোহ, বিপ্লব চলছে। সেই প্রেক্ষাপটেই চারুদত্ত আর বসন্তসেনার প্রেম।’

পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে কোনও রকম? ‘নাটকটা মাল্টিলিঙ্গুয়াল করেছি। বাংলা, সংস্কৃত, ইংরেজি, হিন্দি, এমনকী ওডিয়া ভাষাও ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বোঝা যাবে যে কোনও আঞ্চলিক ঘটনা এটা নয়। এটা যে কোনও প্রান্তেই ঘটতে পারে, ঘটে। আবার, শাস্ত্রীয় নৃত্য-গীত যেমন ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনই আজকের মুভমেন্টও ধরা পড়বে চলনে।’

লাস্য শব্দটা বসন্তসেনার চরিত্র বর্ণনায় আসতে বাধ্য। পোশাকে, অলংকারে, চাহনিতে ভারত কিন্তু একসময়ে ‘উৎসব’ ছবির রেখার মধ্য দিয়েই বসন্তসেনাকে চিনেছিল। প্রসঙ্গটা তোলায় গৌতম সাফ বললেন, ‘রেখার ‘বসন্তসেনা’ দেখিইনি চোখে, শুনেছি বটে লোকেদের মুখে। মঞ্চে যে প্রোডাকশনগুলো হয়েছে তার মধ্যে হাবীব তানবীরের ‘মিট্টি কি গাড়ি’ দেখেছি। তবে সেতো কুড়ি-বাইশ বছর আগে। সবটা আর ভালো মনে নেই।’ লাস্য প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘শুধু লাস্য কেন, নোংরামি, ইতরামো, লোভ ইত্যাদি সবকিছুকে অতিক্রম করে মনের মহত্ব-ই নাটকের কেন্দ্রস্থলে জায়গা করে নেয়। চারুদত্ত-র জন্য সোনার গয়না সরিয়ে নিরাভরণ হয়ে যখন বসন্তসেনা দাঁড়ায়, তখন সে এক সোনার মানুষে রূপান্তরিত হয়। আর মাটির গাড়িটা হয় সোনার গাড়ি।’


শীতের শহরে নাট্য প্রতিযোগিতা নিয়ে হাজির কলাক্রান্তি

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: নাটকের মঞ্চে উঠে আসে কত জীবন কথা... শিল্পীরা তাঁদের ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্টকে পাশে সরিয়ে রেখে মেতে ওঠেন শিল্পচর্চায়। কিন্তু বাস্তব জীবনে তো সেই কষ্টের পিছু ছাড়ানো অত সহজ হয়ে ওঠে না। নাট্যমঞ্চের আলোর পিছনে যে সব শিল্পীরা নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের কথা মাথায় রেখেই ১৯৮৩ সালে কলাক্রান্তি গ্রুপ থিয়েটারের যাত্রা শুরু। নাটককে এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়াও দুস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো ছিল অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

এই লক্ষ্যেই ১৯৯১ সাল থেকে কলাক্রান্তি আয়োজন করে আসছে বহুভাষী ছোট নাটক প্রতিযোগিতা। ২০১৮ সালে এসে সেই প্রতিযোগিতা ২৫-এ পা দিল। সেই উপলক্ষে আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংস্থার তরফে মুক্তাঙ্গন রঙ্গালয়ে আয়োজিত করা হয়েছে নাট্য প্রতিযোগিতা। ২১ ডিসেম্বর এই নাট্য উত্‍সবের উদ্বোধন করবেন মাননীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে প্রয়াত নাট্য ব্যক্তিত্ব অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর একটি চিত্র প্রদর্শনী। কলাক্রান্তির শিল্পীরা পরিবেশন করবেন হুল্লোড় নাটকটি। থাকবে প্রতিযোগিতার প্রথম নাটক বহ্নিশিখা।

'দ্বিতীয় তীজন তৈরি করে যাব আমি'

$
0
0

রেশমী প্রামাণিক

পাট পাট করে আঁচড়ানো চুলের সিঁথিতে উজ্জ্বল লাল সিঁদুর। কপালে বড় বিন্দি, কানে ঝুমকা, হাতে একগাছা চুড়ি এই হল তাঁর সাজ। তিনি তীজন বাই। যাঁর পাণ্ডবানি আজ দেশে-বিদেশে সমাদৃত। ছত্তিশগড়ের ষাটোর্ধ্ব এই শিল্পী এখনও স্বমহিমায় বহন করে নিয়ে চলেছেন তাঁর নিজস্ব সংস্কৃতি। পাণ্ডবানি মহাভারতের কিছুটা অংশ। যেখানে থাকে মহাভারতের যুদ্ধের বর্ণনা, দ্রৌপদী আখ্যান এবং অসহিষ্ণুতার গল্প। যে গল্প ছত্তিশগড় ও তার আশপাশের অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। তাঁর শিল্পের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভারত সরকার ২০০৩ সালে তাঁকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করেছে। সম্প্রতি জাপান থেকে পেয়েছেন ফুকুওকা পুরস্কার। তাঁর জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
এই সময়-এর পোলে অংশগ্রহণ করুন
67628987

ভিলাই থেকে ১৫ কুলোমিটার দূরের একটি গ্রামে তাঁর জন্ম। পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনিই ছিলেন বড়। তাই তীজনের উপর ভার পড়েছিল ভাইবোনদের দেখাশুনো করার। কিন্তু তিনি ছোটদের একপ্রকার জোর করেই গান শেখাতে চাইতেন।
কথাপ্রসঙ্গে তীজন জানান,তাঁদের বাড়িতে গান বাজনার খুব একটা চল ছিল না। এমনকী কেউ পছন্দও করতেন না। এমনও হয়েছে তাঁর মা গান গাইছেন বলে তাঁকে সারাদিন খেতে না দিয়ে একটা ঘরে তালা বন্ধ করে রাখা হত। তীজন পাণ্ডবানি শিখেছেন তাঁর দাদুর ( মায়ের বাবা) কাছ থেকে। নাতনিকে যখন মহাভারতের গান-গল্প শেখানো শুরু করেন তখন তাঁর মা প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন। এমনকী দুহাত দিয়ে তীজনের গলা টিপে ধরেছেন বহুবার। যাতে কোনওরকম শব্দ তীজনের গলা দিয়ে না বেরোয়। কিন্তু এত কিছুর পরও মেয়ে থেমে থাকেননি। মহাভারতে তাঁর প্রিয় চরিত্র ভীম। ভীমের রাগ এবং শক্তির প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। তাইতো দুঃশাসনের উরুভঙ্গমের দৃশ্যটিতে তিনি বারবার অভিনয় করতে পছন্দ করেন।
বয়সের ভারে এখন কিছুটা ন্যুব্জ। কিছুদিন আগেই শারীরিক সমস্যায় বেশ কাবু হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই অভিনয়, মঞ্চের সেই উচ্চগ্রাম এখনও একইরকম আছে।
67639971


তিনি হিংসায় বিশ্বাসী নয়। চান সকলেই মিলেমিশে থাকুক। ভালোথাকার মধ্যে যেন কোনও রকম রাজনীতি না আসে।
বিহার- ছত্তিশগড়ের মহিলাদের হাতে উল্কি আঁকতে অভ্যস্ত। এটা তাঁদের লোকাচারের মধ্যেই পড়ে। সেই প্রথা অনুযায়ী তীজনের হাতেও দেবনাগরী হরফে তাঁর নাম লেখা রয়েছে। কিন্তু তাঁর নাম লেখার কারণ একটু ভিন্ন। অনুষ্ঠানের পর উদ্যোক্তাদের থেকে টাকা নেওয়ার সময় রসিদে যাতে নিজের নাম লিখতে পারেন তার জন্যই এই উল্কি।

এতকিছুর পরও আরও একজন তীজন বাইকে কেন আমরা দেখতে পাচ্ছি না? উত্তরে তিনি জানান, এই মুহূর্তে তাঁর কাছে ২১৭ জন পাণ্ডবানি শিখছে। মেয়েরা যে ভাবে এগিয়ে আসছে তাতে তিনি আশাবাদী। কিছুদিন হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু দ্বিতীয় তীজন বাইকে তিনি তৈরি করে যাবেন।

শীতের শেষবেলায় শহরকে উষ্ণতা বিলোল প্রেরণার নান্দনিক প্রয়াস

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: রিয়্যালিটি শোয়ের যুগে ধ্রুপদী সঙ্গীত বা নৃত্যের নামে অনেকেই নাক কুঁচকোন। তাঁরা ভুলে যান যে কোনও শিল্পের মূল ভিত্তি ধ্রুপদ। এমনকী কিছুক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও চাহিদা থাকে নাচের গান শেখান বা রাগ-তান ছেড়ে গান শেখান। নৃত্য বা সঙ্গীতকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে অনেকেরই আপত্তি। এরকম সময়ে দাঁড়িয়েও যে শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে আসছেন এতেই তিনি কৃতজ্ঞ। আর তাইতো আজকের দিনে বৈঠকী আড্ডা হারিয়ে গেলেও গুরু-শিষ্যের সেই পরম্পরা ধরে রাখতে তিনি মাসে একটা করে বৈঠকের আয়োজন করেন। লুনা পোদ্দার। পরিচয়ে বিশিষ্ট কত্থক নৃত্যশিল্পী। তাঁর সংস্থা প্রেরণা মাঝেমধ্যেই ধ্রুপদী আসরের আয়োজন করে। সেখানে বাঁশি,সেতার, তবলা থেকে শুরু করে সংগীত, নৃত্য সবই থাকে। গত বছর থেকে তাঁরা দুদিন ব্যপী শাস্ত্রীয় সন্ধ্যার আয়োজন করছেন। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। একে অপরের সঙ্গে সংযোগ সাধন করছেন বলে অনুষ্ঠানের থিম সম্বন্ধ। ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি জ্ঞানমঞ্চে অনুষ্ঠিত হল শিক্ষা ২০১৯।


বিপ্লবের সেই ফেলে আসা রোম্যান্সের খোঁজে

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

বিপ্লবের সেই ফেলে আসা রোম্যান্সের খোঁজে
নাটক: এলা এখন
রচনা, নির্দেশনা: কৌশিক ঘোষ
দল: বেলঘরিয়া রূপতাপস
অভিনয়: গৌতম, নীলাভ, তথাগত, শিপ্রা
রেটিং: আড়াই

আন্দোলন কি দেশের স্বাধীনতার জন্যই কেবল হয়? তা বোধহয় নয়। মানুষের খাবারের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার-এসব কথা দেশের সংবিধানে বলা থাকলেও সত্যিই কি এতো সব আছে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই 'ভুখ সে মরনেওয়ালে'-র আসলে কিছু বলার অবস্থা থাকে না। ধুঁকে ধুঁকে তাকে মরতে হয়। এভাবেই মরতে হবে জেনেও কিস্যু করার থাকে না। কারও হাতে নষ্ট করার মতো টাকা আছে, পেটের আয়তনের কয়েকশো গুণ খাবার আছে, অথচ বিপুল সংখ্যক মানুষকে আধপেটা হয়ে কাটাতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। নিজের অধিকারগুলো থেকে এভাবে দিনের পর দিন বঞ্চিত হতে থাকাও তো পরাধীনতা। আর মৃত্যু আসতে চলেছে এই নিশ্চয়তার মধ্যে দাঁড়িয়েই কারও কারও মধ্যে রোষ তৈরি হয়, সাহস গড়ে ওঠে: 'নেহি মত সে ডরনেওয়ালে'। এই রকম একটা অবস্থানে দাঁড়িয়ে যদি রবি ঠাকুরের 'চার অধ্যায়' উপন্যাসটি পড়া যায়, তবে এ নাটকের তাৎপর্যটা ধরতে পারা যায়। ফুরিয়ে যায়নি এলা, অন্তুর লড়াই। শেষ হয়ে যায়নি তাদের প্রেম। তাই আরও একবার।

'এলা এখন' নামটির মধ্যেই অবশ্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া রয়েছে যে উপন্যাসটিকে পড়া হচ্ছে এই সময়ে দাঁড়িয়ে। কিন্তু ওই যে বলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। তাই যে যে সমস্যাগুলো রবি ঠাকুরের চোখে পড়েছিল, সেসব সামান্য রূপ বদলে এসে পড়ছে এখনও। অতীন স্বপ্ন দেখে, এলার মধ্যে মমতা, ইন্দ্রনাথের জেদ-এসব কোনওটাই ইতিহাস নয়, বর্তমানও বটে। নাটকের শুরুর দিকটা বড্ড স্লো। আধ ঘণ্টা চলার পর খানিকটা গতি আসে। কথা হচ্ছে, বিপ্লবটা বিপ্লব সত্যিই, কিন্তু সংগ্রামপন্থায় কি অনেক পরিবর্তন আসেনি? এখন কি বিপ্লবীরা জঙ্গলে পাতা-ছাপ পোষাক পরে ইনসাস হাতে নিয়ে লড়ে এমনটাই আমরা দেখি না? এখন কি কাউকে তাড়া করে ধরতে হয়, নাকি মোবাইলের টাওয়ার ধরেই লোকটার লোকেশন বুঝে ফেলা যায়? তাছাড়া ঘটনাপ্রবাহ কোথায় ঘটছে এমন একটা বর্তমান এবং বাস্তব রেফারেন্সও তো দরকার। এসবের একটা খামতি থেকে গিয়েছে উপস্থাপনায়। তবু ডায়ালগের কাব্যগুণ ব্যবহার করে কিছু মুহূর্ত করার চেষ্টা করেছেন বটে এলা-অন্তু অর্থাৎ শিপ্রা এবং তথাগত। কিন্তু কাব্যিক গুণ যুক্তির ঘাটতিগুলো পূরণ করতে পারে কি!

এই বুঝি বিজ্ঞান অপবিত্র করে দিল সবকিছু

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা


নাটক: অপবিত্র
ভাবানুবাদ, নির্দেশনা: চন্দন সেন
দল: নাট্যআনন
অভিনয়: অসিত, ভদ্রা, সব্যসাচী, চন্দন, শান্তিলাল
রেটিং: চার


'ইনহেরিট দ্য উইন্ড' নাটক অবলম্বনে তৈরি হয়েছে 'অপবিত্র'। মূল নাটক থেকে অনুবাদ করেছেন চন্দন সেন, পরিচালনাও তাঁরই। ১৯৬০ সালে লেখা লরেন্সের সেই নাটকের প্লটের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সত্য ঘটনা। ১৯২৫ সালে উত্তর আমেরিকার এক স্কুলশিক্ষক ছাত্রদের ক্লাশে ডারউইনের তত্ত্ব পড়ান। আর এই বিবর্তন তত্ত্ব পড়ানোর কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। চোর, ডাকাত, রাষ্ট্রদ্রোহীর বাইরে এই রকম কোনও কারণেও যে একজন মাস্টারমশাই গ্রেপ্তার হতে পারেন তা সাধারণ মানুষের প্রায় অজানা ছিল। শিক্ষক বারট্রাম কেটস-এর হয়ে লড়তে আসেন উকিল ডিফেন্স অ্যাটর্নি হেনরি ড্রামন্ড। খবর প্রকাশ করতে এগিয়ে আসেন সাংবাদিক ই কে হর্নবেক। অ্যাডভোকেট ম্যাথিউ ব্র্যাডি শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে লড়েন। পাশাপাশি, পাদ্রী ব্রাউন নিন্দায় মুখর হয়ে ওঠেন। উকিল ড্রামন্ডের ভূমিকায় সব্যসাচী চক্রবর্তী। আর তাঁর বিপরীতে অ্যাডভোকেট ম্যাথিউ ব্র্যাডির ভূমিকায় অসিত বসু। সাংবাদিক চন্দন সেন এবং পাদ্রী শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়।

লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, নাটকটাকে অহেতুক এদেশের মতো, এই সময়ের মতো করে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। একই গল্প এবং একই চরিত্র রেখে দেওয়া হয়েছে। মনে রাখা দরকার, হলিউডে আলাদা আলাদা সময়ে নাটকটিকে ভিত্তি করে তিন বার সিনেমা বানানো হয়েছে। অর্থাৎ পাল্টে যাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাটকটির তাৎপর্য আমেরিকায় ফুরিয়ে যায়নি। এদেশেও কি তাৎপর্য আছে? অবশ্যই আছে, কিন্তু জোর করে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার কোনও অতিরিক্ত প্রয়াস নেওয়া হয়নি। কিন্তু যদি মন দিয়ে নাটক দেখা যায়, তাহলে ডায়ালগের ফাঁকে ফাঁকে খুব সূক্ষ্মভাবে বানর সেনার কথা কিংবা পুরাণের রেফারেন্স যে সেলাই করে দেওয়া হয়েছে তা বুঝতে পারা যাবে। তাছাড়া নাটকে ডিফেন্স ল-ইয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন যে বিজ্ঞানের তত্ত্ব, সত্য পড়ানো হলে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন আইন কেন রাখা হয়েছে দেশে? এই প্রশ্নটি নিঃসন্দেহে মারাত্মক। তাছাড়া সিবিআই পুলিশকে গ্রেপ্তার করবে নাকি পুলিশ সিবিআইকে, এই নিয়ে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন গ্রেপ্তারির তাৎপর্য তো হারিয়ে যায়নি! তাই না!

বিরাট কিছু আয়োজন কিংবা গবেষণা করা হয়নি সেট বা আলো নিয়ে। খুব ট্র্যাডিশন্যাল পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। বরং অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ডায়ালগের উপর। টানটান সংলাপ, কখনও সখনও স্যাটায়ারের খোঁচা আগাগোড়া মনোযোগ টেনে রেখে দেয়। পাদ্রী হিসেবে শান্তিলাল একটা মেজাজ ধরে রেখেছেন। পাদ্রী যেন সব বুঝতে পারছেন কিন্তু এতোদিন যে বিশ্বাস নিয়ে বেঁচেছেন তা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। চন্দন সেনের সাংবাদিকসুলভ খোঁচাগুলোও চমৎকার। ভদ্রা বসুর শান্ত অভিনয় ভীষণ সুন্দর। তবে নাটকের সেরা অসিত বসু। তিনি মঞ্চে যতক্ষণ থেকেছেন এমনকী বিপরীত পক্ষের উকিল সব্যসাচীকেও ফিকে লেগেছে। কখনও সখনও ডায়ালগ ছাড়া স্রেফ একটা লুক কিংবা মুভমেন্টেও তিনি মাত করেছেন। তাঁর জন্য এ নাটক দেখা দরকার অভিনয় শিক্ষার্থীদের।

বাংলা নাটকের নামে পদ্মাপারে পপুলার অশ্লীলতার আখড়া!

$
0
0

এই সময় বিনোদন ডেস্ক: ইন্টারনেটের যুগে সবই যে এখন সহজলভ্য এ আর নতুন কি। এই প্রজন্মের কাছে ওয়েব সিরিজ খুবই জনপ্রিয়। সেন্সর বোর্ডের কোপ না থাকায় কঠিন বাস্তব-রাজনৈতিক গল্প যেমন সহজে বলা যায়, তেমনই যৌন উত্তেজক দৃশ্য দেখাতেও কোনও দ্বিধা থাকে না। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা বলছে পদ্মাপারে এখন বাংলা নাটকে যৌনতার খুবই রমরমা। এমনকী স্কুল পড়ুয়ারাও বাদ পড়ছে না। সেই ভয়াবহতা এতখানিই যে ছেলেদের থেকে মেয়েরা বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে। যেখানে যৌনতার কোনও মাপকাঠিই থাকছে না।

বাংলাদেশের এক সংবাদ সূত্রে খবর, একসময় বাংলাদেশের মানুষ অশ্লীলতার জন্য় হলে গিয়ে কোনও সিনেমা দেখতেন না। এমনকী হল মালিকেরা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতেও বাধ্য হয়েছিলেন। তবে বর্তমানের বাংলা নাটক নাকি সেই সব সীমাকে অতিক্রম করে গিয়েছে। উঠে আসছে সাদিহা জাহান প্রভা নামের এক অভিনেত্রীর নাম। যিনি এককালে পর্নস্টার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বেশকিছুদিন সিনে দুনিয়া থেকে তিনি দূরে ছিলেন। বর্তমানে তিনি আবার নাটকে ফিরে এসেছেন।
দেখুন ভিডিয়ো

আর তারপর থেকেই ওয়েব সিরিজ নাটক এত পপুলার বাংলাদেশে। যেকানে অশ্লীলতার কোনও সীমা-পরিসীমা নেই।

জনপ্রিয় নায়িকা আচমকাই নিখোঁজ, ইন্ডাস্ট্রি তোলপাড়!

$
0
0

এই সময় বিনোদন ডেস্ক:খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা নায়িকা ফারিয়াকে। কোথায় আছেন, কী করছেন কিছুই জানতে পারছেন না কেউ। এত বড় মাপের একজন অভিনেত্রী হঠাৎ কেন উধাও হলেন- এই প্রশ্ন ঘুরছে সব মহলেই।

নায়িকার উধাও নিয়ে পত্রিকাতেও খবর প্রকাশ হচ্ছে। এসব খবরের বেশির ভাগই মনগড়া।

এমনই এক বাস্তবতায় তপু নামের এক বিনোদন সাংবাদিক তাকে আবিষ্কার করেন থাইল্যান্ডের পাটায়ায়। ফারিয়া ওখানে একটি কোম্পানিতে কাজ করছেন। ফারিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় তপুর। তপু জানতে চান কেন তিনি এত বছর নিজেকে গোপনে রেখেছেন ? কোন উত্তর দেন না ফারিয়া। শুধু জানান, আগের জীবনকে ভুলে থাকতে চান তিনি।

কেন ফারিয়া ভুলে থাকতে চান তার রঙিন জীবনের স্মৃতি? কেন এত দিন ভক্তদের ছেড়ে আড়ালে আছেন? নায়িকার নিখোঁজ হওয়ার গল্প নিয়েই নাটক ‘কেমন আছে ফারিয়া’। থাইল্যান্ডে চিত্রায়িত নাটকটি রচনা করেছেন দয়াল সাহা। নাটকটি পরিচালনা করেছেন দীপু হাজরা। ফারিয়ার চরিত্রে অভিনয় করছেন অপর্ণা ঘোষ।

'আয়, আরও বেঁধে বেঁধে থাকি'... ফিরছে ৩২ অশ্বিনী দত্ত রোডে

$
0
0

এই সময় বিনোদন ডেস্ক: হারিয়ে যাচ্ছে লাল বাড়ি আর সবুজ সার্সিওয়ালা বাড়ির গল্প। হারিয়ে যাচ্ছে ছাদ। হারিয়ে যাচ্ছে পরিবারের সকলকে সঙ্গে নিয়ে বেড়ে ওঠার গল্প গুলো। আর সেই সঙ্গে ব্যস্তজীবনে ফিকে হয়ে যাচ্ছে সম্পর্কগুলো। সেই রোজকার জীবনকেই ফিরে দেখার চেষ্টা "৩২অশ্বিনী দত্ত রোড"-এ। বাড়ির বউ, ছেলে, মেয়ে, স্বামী সকলকে নিয়েই এই নাটকের প্লট। একটা বাড়ি জুড়েই চলে নাটক। নানা ঘরে ঘুরে ঘুরে অভিনয় করেন চরিত্রেরা। প্রথম উপস্থাপিত হয় ২৯ ডিসেম্বর, তারপর দর্শকের চাহিদায় এবং সকলের মন্তব্য মাথায় রেখে আবারও উপস্থাপিত হয় ১৭ মার্চ।
মূল কনসেপ্ট সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, 'আাবারও এপ্রিল মাসে আমরা ফিরে আসব, কিন্তু প্রতিবারই মূল গল্পের মধ্যে দর্শক ধারাবাহিকতা পাবেন। অর্থাৎ গল্পের মধ্যে কিছু রদল বদল থাকলেও মিল থাকবে।'
68498116

এই নাটকের বিভিন্ন চরিত্রেরা হলেন সুপর্ণা, রাই, শুভশ্রী, বুবুন, ইন্দ্রায়ুধ, তিতির, কুর্চি, নন্দা, ইমন, শ্বেতা, শর্মি, ইমন, মধুমন্তী, অভিষেক, সৌম্য।

‘মহাভারত’ মঞ্চে অর্ণ দুর্যোধন, দ্রৌপদী সোহিনী

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

মহাভারতের উদ্যোগ পর্ব নিয়ে বলতে বসলে কিন্তু খুব বেশি কিছু বলে ওঠার উপায় নেই। কারণ, এই সময়টায় তেমন একটা বলার মতো অ্যাকশন কিছু ঘটেনি। বহু আলোচিত পাশাখেলা, বস্ত্রহরণ, বনবাস, খুন-জখম ইত্যাদি রোমহর্ষক ব্যাপারগুলো নেই। বরং আছে অনেক বেশি ভাবনা, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষা। আসলে, মানুষ যখন নিজের মতো করে ভাবতে বসে, তখন সে কী কী ভাবলো সেটা কি ঠিক গুছিয়ে বলা যায়? এও তেমনি। প্রায় কিছুই ঘটে না এই পর্বে বলার মতো। তবে ভাবার মতো ঘটে। কী কী ঘটতে পারে আগামীতে তার একটা ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়ে যেতে থাকে। ঘুটি সাজানো চলে। এই অন্য রকম পর্বটিকে নিয়েই নাটক তৈরি করছেন অর্ণ মুখোপাধ্যায়, প্রযোজনায় হাওড়া নটধা।

অর্ণ বলেন, 'পান্ডবরা সেই সময়ে কনফিউজড। যুদ্ধ করা হবে নাকি নয়। অর্জুন আমার নাটকে বই পড়েন। আর যুধিষ্ঠির নীতির কথা বলে যেতে থাকেন। একমাত্র দ্রৌপদী সওয়াল করে যেতে থাকেন যুদ্ধের পক্ষে। তিনি এখানে খুব পুরুষালী এক চরিত্র। তিনি নিজের পুরনো অপমানের স্মৃতি উগড়ে দিয়ে যুদ্ধে উদ্বুব্ধ করেন।'

এহেন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রটিতে অভিনয় করছেন সোহিনী সরকার। তিনি পর্দায় ব্যস্ত হলেও একসময়ে নাটকে যুক্ত ছিলেন সক্রিয়ভাবেই। চেতনা নাট্যগোষ্ঠীতে ছিলেন বেশ কিছুদিন। কাজ করেছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তীর কাহিনি অবলম্বনে নাটক 'মানুষ কিংবা কোলবালিশ'। ছিলেন 'চিরকুমার সভা'তেও। তাঁকে পাওয়া গিয়েছে অশোক মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'যোগাযোগ' নাটকে। শেষ তিনি মঞ্চে কাজ করেন 'অবয়ব' নাটকে। সোহিনী বলেন, 'এটা মহাভারতের এমন একটা পর্ব যেখানে বিভিন্ন চরিত্রের সাইকোলজিক্যাল দিকগুলো বেরিয়ে আসে। একটা লোককে আমরা যেভাবে দেখে অভ্যস্ত, তার বাইরে অন্য একটা দিক উন্মোচিত হয়। দ্রৌপদী এখানে মানসিকভাবে ভীষণ বলিষ্ঠ এক চরিত্র যিনি প্রতিশোধ চান। তাঁর মধ্যে কাজ করছে ম্যাসকুলিন ইমোশন। মহাভারতের যুদ্ধ হওয়ার পিছনে তিনিই অন্যতম চালিকাশক্তি।' কেমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য? 'আলাদা করে কিছু নিইনি। আগের কিছু দেখিওনি। তবে অর্ণ-র অনেকগুলো নাটক আমি দেখেছি। 'অথৈ' আমার খুব প্রিয়। ওর সঙ্গে অনেকদিন ধরেই মঞ্চে কাজের কথা চলছে। এই রোলটায় কেমনভাবে কাজ করব ও আমায় সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে।'

এ নাটকে কৃষ্ণের ভূমিকায় রয়েছেন রুদ্ররূপ মুখোপাধ্যায়, ভীম হচ্ছেন সুমিত পাঁজা, অর্জুন হচ্ছেন অর্পণ ঘোষাল, অভিমন্যুর ভূমিকায় ঋষভ বসু। প্রবীণ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় রয়েছেন কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, যিনি নিজের পরিচালনায় ব্রাত্য বসুর 'জতুগৃহ' নাটকে ছিলেন দুর্যোধনের রোলে। এ নাটকে দুর্যোধন অবশ্য অর্ণ নিজেই।

অর্ণ জানাচ্ছেন, এ নাটকে দুর্যোধন একটা অটোক্র্যাসির রূপক। তিনি একক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকতে চান। তাঁর মত, একটিই স্বর থাকবে আদেশ দেওয়ার জন্য, আর বাকি সমস্ত কণ্ঠ রোধ করা হবে। অর্ণ বলেন, 'নাটকের মধ্য দিয়ে সময়টাকে ধরতে চেয়েছি, যখন অটোক্র্যাসির মুখগুলো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এক ত্রিকোণ আবর্ত গড়ে উঠবে। একদিকে আছেন পান্ডবরা, অন্যদিকে কৌরব পক্ষ, আর দু'য়ের মাঝে ম্যানিপুলেট করছেন কৃষ্ণ, তিনি একটা তৃতীয় শক্তি। তিনি দুটি পক্ষের মাঝে দৌত্য করেন। এমনকী কর্ণকে পক্ষে আনতে তিনি দ্রৌপদী-র টোপও দেন। অভিমন্যুও এখানে অন্যরকম। সে এক নিষ্পাপ তরুণের প্রতিনিধি। তার মন নরম, কিন্তু পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে আর্মিতে যোগ দিয়েছে। সে অমন দক্ষ এক যোদ্ধা, চক্রব্যূহে ঢুকে পড়লে বেরনো যে প্রায় অসম্ভব একথা কি তার জানা নয়? জেনে শুনে এভাবে ব্যূহে ঢুকে পড়া কি তবে আত্মহন্তারক প্রয়াস? এমনই নানা প্রশ্ন মহাকাব্যের মধ্য থেকে তুলে দিচ্ছে এই নাটক। এই সময়কে মহাকাব্যের মধ্যস্থতায় কতখানি ব্যাখ্যা করতে পারলো এ নাটক তা জানতে অপেক্ষা সামান্যই। আগামী ২৮ এপ্রিল অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহে দুপুরে এবং সন্ধ্যায় প্রথমবারের জন্য পর পর অভিনীত হবে 'মহাভারত'।

কাশ্মীরেই তো সেরা নাটকটা হয়ে চলেছে

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

বেশ একটা একাকীত্বে ভোগা মানুষের এক্সপ্রেশন তখন তাঁর চোখে-মুখে। যেন অনেকটা 'লস্ট', কিছু একটা ভাবনায় ডুবে আছেন, যেন কিছুই ভালো লাগছে না। বারুইপুরের বাগানবাড়ির বারান্দায় এসে কথা বলতে বসলেন বটে, কিন্তু যেন তখনও চরিত্রের মধ্যেই তাঁর অবস্থান। এমন মগ্ন অভিনয়ের জন্যই তিনি খ্যাত, এম কে রায়না। সৌনক মিত্র পরিচালিত শর্ট ফিল্ম 'এক্সচেঞ্জ অফার' ছবিতে অভিনয়ের জন্যই তাঁর আসা। কেন মুখে চোখে এমন এক্সপ্রেশন তা বোঝা গেল ছবির কথা তাঁর থেকে জানার পর।

ছবিতে রায়নার নাম শিব কুমার পন্থ। তিনি এক অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল। বিশ্বেশ্বর নামে এক পরিচারকের সঙ্গে দিন কাটে। তাঁর পুত্র ঋষভ ক্যালফোর্নিয়ায় থাকে স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে থাকে। বাবার সঙ্গে যোগাযোগের বিশেষ সময় পায় না। ফোনেই যা কথা হয়। পুরনো কম্পিউটারে বসে কবিতা লিখে সময় কাটান তিনি। তেমনই কিছু মুহূর্ত ক্যামেরার সামনে কাটিয়ে উঠে আসার কারণেই সম্ভবত রেশ রয়ে গিয়েছে চোখে-মুখে। আপনি তো কাশ্মীরের মানুষ? একটু সময় নিয়ে বললেন, 'হ্যাঁ, আমার জন্ম তো শ্রীনগরে। ওখানেই স্কুল-কলেজে পড়েছি। পরে নাটক শিক্ষার জন্য দিল্লি যাই, এনএসডিতে ভর্তি হই। আমরা কাশ্মীরি পন্ডিত পরিবারের ছেলে। আমাদের বাড়িতে কেউ কোনও দিন নাটক করেননি। বরং বাড়িতে অনেক ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বাবা অবশ্য মারাত্মক রকম রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন। যার প্রভাব আমার উপর পড়েছিল পরবর্তীকালে। তবে কাশ্মীর নিয়ে যে নাটক হচ্ছে দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে কাশ্মীর কিংবা নাটক কোনওটাই বোধহয় আমি তেমন শিখতে পারিনি', এবার বেশ খানিক হেসে ফেললেন তিনি।

সরকারি অনুদান ছাড়া তো নাটক করা কঠিন হয়ে পড়ছে, থিয়েটারের খরচ যে রকম বাড়ছে... মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললেন, 'সরকারের উপর নির্ভর করার তো দরকার নেই। সরকারি অনুদানের উপর ভিত্তি করে তো সবাই থিয়েটার করেন না। অনেকই ইন্ডিপেনডেন্টলি কাজ করেন। আমিও করি। স্বাধীনভাবে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের অনেকের থেকেই আমরা চমৎকার সব প্রোডাকশন পাচ্ছি। সেটা কিন্তু গোটা ভারত জুড়েই। টাকার অভাবের মধ্যেও মাথা তো কাজ করতেই থাকে, সে সরকার আমাদের যতোই ব্রেন ডেড করে দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন। মাথা খাটালেই এমনকী কোথায় নাটক করবো তাও বেরিয়ে আসে। বাড়ির বড় দালান, উঠোন, বাগান, গ্যারাজ, মন্দির চাতাল থেকে শুরু করে লাইব্রেরির বড় কক্ষ-সর্বত্রই তো নাটক করা সম্ভব। আর এভাবে কাজ করলে নতুনত্ব আসবে, ভিস্যুয়ালি নতুন কিছু দেখা যাবে।'

কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে বাধা আসবে তো নিশ্চয়ই, নাকি? 'দেখুন আমি খুব একরোখা মানুষ। আমার থিয়েটার আটকাতে গেলে গেরিলা থিয়েটার শুরু করব। এমার্জেন্সির সময় তো আমার নাটক ব্যান করা হয়েছিল। তাও চালিয়ে গিয়েছি। মনে রাখবেন, থিয়েটার হলো যে কোনও গণতন্ত্রের সেফটি ভালব। শাসক এবং শাসিতের মধ্যবর্তী মাধ্যম হল থিয়েটার। আরও একটা ব্যাপার, দেশে যখন কোনও রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিবেশ আসে, কিংবা স্বৈরতন্ত্র মাথা চাড়া দেয়, তখনই কিন্তু থিয়েটার করার আদর্শ সময়। থিয়েটারের কাজ প্রশ্ন তোলা এবং সত্যি বলা।'

নতুন কাজ কি করছেন? 'গান্ধী অ্যান্ড আ চাইল্ড' নামের একটা নাটক করছি। একটা বাচ্চা সবরমতী আশ্রমে বেড়ে উঠছে, সে কেমনভাবে গান্ধীকে দেখছে সেটাই বিষয়।'

বাংলার নাট্যকারদের কাজ দেখেছেন নিশ্চয়ই অনেক? রায়না বলেন, 'এখনকার কিছু দেখা হয়নি। অনেক দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি। কিন্তু যা ভুলতে পারিনি তা হল বাদল সরকার। এক্কেবারে খাঁটি থিয়েটারের মানুষ। ওঁর 'বাকি ইতিহাস' তো আমি আমার মতো করে তৈরি করেছি। এখনও তার শো হয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। আপনাদের শহরেও কখনও দেখাতে পারবো নিশ্চয়ই।'


পুলওয়ামার জন্য তো কাঁদলেন, এ বার একসঙ্গে জালিয়ানওয়ালাবাগের জন্য আসুন

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বাইরের দেশের হানায় দেশের ছেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নাড়া দেয়! নাড়া দেয় বৈকি! সম্প্রতি পুলওয়ামার হামলা তেমনই দুলিয়ে দিয়েছিল দেশের মানুষজনকে। কিন্তু এ যে ২০১৯। ১০০ বছর আগে ১৩ এপ্রিলের কাহিনি, মনে পড়ে কিছু? ঠিক ধরেছেন। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। যে ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের জন্য রবি ঠাকুর তাঁর নাইটহুড উপাধি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সে কাণ্ডের ১০০ বছর অতিক্রান্ত হতে চলল। আজ অবধি ব্রিটিশরা ক্ষমা চায়নি। ১৩ এপ্রিল সেই জালিয়ানওয়ালাবাগ শহীদদের সেলাম জানাতে চলেছে নাটকের দল 'উজান'। গান আর গল্পের মেলবন্ধনে জালিয়ানওয়ালা বাগের সেই দগদগে ঘা আর এক কলকাতার মানুষজনকে আঁচ দেবে জালিয়ানওয়ালাবাগ: শতবর্ষে সেলাম'। ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যে ৬:৩০-এ অনুষ্ঠানটি দেখা যাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন মঞ্চে।

অনুষ্ঠানের পরিচালনা করছেন সুতীর্থ বেদজ্ঞ। রূপায়ণে অরূপ মজুমদার, রিনি মিত্র, সৈকত শেখরেশ্বর রায়, দেবলীনা ভট্টাচার্য, রোহিণী রায়চৌধুরী, হিমিকা মুখোপাধ্যায়, প্রসূন দাস, সৌমিত বসু, এবং একটি বিশেষ ভূমিকায় রয়েছেন দেবাশিস রায়চৌধুরী।

পরিচালক সুতীর্থ বেদজ্ঞের বললেন, "শুধুমাত্র একটা অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। ১০০ বছরে শহীদদের স্যালুট জানানোই ছিল আমাদের মূল ভাবনা। এটিকে আদ্যোপান্ত একটি দৃশ্যশ্রুতি প্রযোজনাও বলা যেতে পারে। আমরা উজান পরিবার খুবই নবীন। তিন বছর হল আমরা আমাদের প্রযোজনা মঞ্চস্থ করতে শুরু করেছি।"

তবে ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে এনে আজকে নাটকের আকারে মঞ্চস্থ করতে তো ঝুঁকি প্রচুর। পরিচালকের কথায়, "২০১৯ সালটা শুরু সময়েই মাথার মধ্যে কিরকম একটা যেন বিদ্যুৎরেখার মতো খেলে গেল জালিয়ানওয়ালা। তখন মনে হল ঠিক সেই দিনেই আমরা একটা অনুষ্ঠান করতে পারি। টেনশন তো ছিলই। খরচাও অনেক। কিন্তু আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলোকে মাথায় রেখেই অনুষ্ঠানটি মঞ্চস্থ করতে চলেছি। তবে বিষয়টা তথ্যের বাগাড়ম্বর ভাবলে ভুল হবে। আমাদের উদ্দেশ্য একটা গল্প বলা।"

'জালিয়ানওয়ালাবাগ: শতবর্ষে সেলাম' অনুষ্ঠানটির গানগুলির মূলভাবনায় গায়িকা রোহিণী রায়চৌধুরি। বললেন, "রবীন্দ্রনাথ জালিয়ানওয়ালাবাগের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক। তাই তাঁর গান তো থাকছেই। তাছাড়াও আমরা ভাবছিলাম, যদি অন্য কোনও গান ব্যবহার করা যায়। পঞ্জাবি গান থাকছে, বৈশাখি উৎসবেরও কিছু গানও থাকছে। প্রতিবাদের গান তো থাকছেই। নজরুলের গান, সলিল চৌধুরির গান রয়েছে। তবে সবটাই যে জালিয়ানওয়ালা বাগ নিয়ে তা নয়। হিন্দি সিনেমার কিছু দেশাত্মবোধক গানও থাকছে।"

রঙ্গমঞ্চেই নিভল এই কমেডিয়ানের জীবন প্রদীপ

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: স্টেজই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। সেই রঙ্গমঞ্চেই শেষ হল জীবনের নাটক। স্টেজে অভিনয় করতে করতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ব্রিটিশ স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান আয়ান কগনিটো।

মৃত্যুর মাত্র ১০ মিনিট আগেই স্টেজে উঠে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অভিনয় করেছিলেন তিনি। তাই সত্যিই যখন তিনি স্টেজে অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন দর্শক এবং কলাকুশলীরা মনে করেছিলেনতিনি ঠাট্ট করছেন। বেশ কিছুক্ষণ পরেও তিনি না ওঠায় তড়িঘড়ি অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। কিন্তু তাঁকে সেখানেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া শিল্পী মহলে। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কমেডিয়ান রাফাস হাউন্ড, জিমি কার, মার্ক স্টিল এবং কেটি ব্র্যান্ড।

শম্ভ‌ু মিত্রের 'বহুরূপী'তে মেয়েদের হেনস্থার অভিযোগ

$
0
0

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: এ বার মেয়েদের শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠল 'বহুরূপী' নাট্যদলের অন্দরে। শম্ভ‌ু মিত্রের বহুরূপী, রবীন্দ্র নাটকের আঁতুড়ঘর বহুরূপী, বাংলার নাট্যমঞ্চের বহু ইতিহাসের সাক্ষী বহুরূপীতে এই গুরুতর অভিযোগ ওঠায় বিস্মিত বাংলার সুধীজন।

আগামী পয়লা মে বাহাত্তরে পড়বে বহুরূপী। তার আগে দলের পঁচিশ জন সদস্য পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমিকে এক চিঠিতে জানান, 'এখানে মেয়েদের কোনও নিরাপত্তা নেই। একাধিকবার মেয়েদের শারীরিক ভাবে হেনস্থা (MOLESTATION) করা হয়েছে।' দলের সুনামের কথা ভেবে এতদিন তাঁরা চুপ থাকলেও এ বার 'বাঁচুক বহুরূপী বাঁচুক থিয়েটার' শীর্ষক চিঠিতে তাঁরা শহরের বিশিষ্ট মানুষদের বিষয়টি জানিয়েছেন। দলের এক তরুণী শিক্ষার্থী ফেসবুক লাইভ করে দলের 'অরাজকতার' বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব অনেকেই।

সিনেমা জগতে মেয়েদের হেনস্থা নতুন কিছু নয়। 'মি টু' আন্দোলনে অনেকেই তাঁদের হেনস্থা হওয়ার কথা সবিস্তার জানিয়েছেন। কিন্তু কলকাতার অন্যতম সেরা নাট্যদলের অন্দরে প্রকাশ্যে এ জাতীয় গণঅভিযোগ নতুন। ডামাডোলের জেরে আরও একবার ভাঙনের মুখে শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্রের দল। বছর খানেক আগে দলের তিন পরিচিত অভিনেত্রী দল ছেড়ে অন্য দল গড়ে নাটক করছেন। এ বার প্রতিবাদ করায় পঁচিশ জন অভিনেতা-অভিনেত্রী সাধারণ সদস্য বহিষ্কৃত হয়েছেন। মহিলা নাট্যকর্মীদের প্রতি অশালীন আচরণের গুরুতর অভিযোগ ছাড়াও টাকাপয়সা নয়ছয়ের অভিযোগও তুলেছেন বহিষ্কৃতরা। দলের তরুণ সদস্যা সঙ্গীতা সরকার ফেসবুক লাইভে বলেছেন, 'আমার এক বান্ধবীর সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করা হয়েছে। বহুবার বলা সত্ত্বেও মিটিং হয়নি। কর্তৃপক্ষও কোনও ব্যবস্থা নেননি। শেষপর্যন্ত সবাই মিলে চিৎকার করে বলার পর অবশ্য মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে।'

দলের সিনিয়র সদস্য পার্থ গোস্বামী, বুলু মজুমদার, শেখর হীরা প্রমুখ বহিষ্কৃত। পার্থবাবু দলের সঙ্গে ৪৪ বছর ধরে যুক্ত। তাঁর সাফ কথা, 'দলে মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। অনেক মেয়েকেই শারীরিক ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে। কিন্তু এতদিন দলের সম্মানের কথা ভেবে আমরা চুপ করে থেকেছি। এই সব অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের উল্টে বাঁচানোর চেষ্টা করে চলেছে দলের সম্পাদক প্রবাল মুখোপাধ্যায়, সুশান্ত দাস প্রমুখ।' কিন্তু দলে তো দেবেশ রায়চৌধুরীর মতো নাট্যব্যক্তিত্ব এখনও রয়েছেন। তাঁরা কিছু বলেননি? পার্থর কথা, 'উনি এইসব ঘটনাকে সামান্য ব্যাপার বলে মেয়েদের চুপ করে থাকতে বলেছেন। যারা অভিযোগ তুলেছে তাদের বলেছেন, বড় হয়েছ, এমন ব্যাপার ঘটেই থাকে, মানিয়ে নাও।'

তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বিভাস চক্রবর্তী, পবিত্র সরকারদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে বিভাসবাবু বলেন, 'আমি জানি যে, বহুরূপীতে অনেকদিন ধরেই ক্ষমতাসীন ও বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মধ্যে সমস্যা চলছে। দু'পক্ষই আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের আপসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি, দলের বাইরে থেকে এর বেশি কিছু করা আমার পক্ষে শোভনীয় নয়। আর ওই মেয়েটির অভিযোগ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।'

এ নিয়ে বহুরূপীর প্রধান মুখ দেবেশবাবুর কী বক্তব্য? 'ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর জন্য কয়েকজন মিলে এটা করছে। আমি বহু বছর দলের সঙ্গে আছি। অনেকবার ভাঙন দেখেছি। অনেকে এসেছে। অনেকে বেরিয়ে গেছে। কিন্তু দল যে বাহাত্তর বছর ধরে চলছে সেটা তো এমনি এমনি নয়। কিছু সদর্থক ব্যাপার তো দলের ভিতর নিশ্চয়ই আছে, না-হলে তো কবেই দল উঠে যেত।'

বিবাদের প্রসঙ্গে জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, 'ঝগড়া, মতান্তর তো বাড়িতেও হয়ে থাকে। কিন্তু সে-সব কথা কি সকলে বাইরে বলে বেড়ায়? সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপারটাকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসে কী লাভ হল? দলের নানা পদক্ষেপে যদি কারও আপত্তি বা অসন্তোষ থেকে থাকে তা নিয়ে তো আলোচনায় বসেই সমাধান করা যেত।'

নাট্যকর্মীদের ক্ষোভের কারণে আগেও বহুবার ভাঙন ধরেছে বহুরূপীতে। বছর কয়েক আগে সুমিতা বসু, তুলিকা দাশ, সুকৃতী লহরী প্রমুখ নাট্যব্যক্তিত্বরা বেরিয়ে এসে 'বহুস্বর' তৈরি করেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে দেবেশ বলেন, 'ওঁরাও কথা বলে সমস্যা মেটাতে পারতেন। আলোচনায় বসার সাহস সবসময় থাকা উচিত। একটা কিছু গড়ে তুলতে অনেক সময় লাগে। ভেঙে দেওয়া যায় এক সেকেন্ডে।' ঘটনা হল, এ বারের অনেক অভিযোগের সঙ্গে তুলিকা, সুকৃতিদের অভিযোগের অনেক মিল ছিল।

বহুরূপীতে এখন পদাধিকারীরা নাটক করেন না। প্রশাসনিক কাজ করেন। সংস্থার কর্তা সুশান্ত দাশের কাজ নিয়ে অনেক অভিযোগ বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর। তাঁদের বক্তব্য, 'উনি বহুদিন বহুরূপীতে থাকার সুবাদে দলকে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবতে শুরু করেছেন। পরিচালন সমিতি তাঁর হাতের পুতুল। সদস্য-সদস্যাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। সাধারণ সভা হয় না। আয়-ব্যয়ের হিসাবও দেওয়া হয় না। দলের তহবিল তছরুপ হচ্ছে বলে আমাদের আশঙ্কা!' নামী সংস্থা বলে বহুরূপীতে অনুদান বেশি।

সুশান্তবাবু সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, 'আমাদের বিভিন্ন মিটিংয়ের রেকর্ডিং আছে, যে কোনও দিন চাইলে শোনাতে পারি, কে বলল মিটিং হয় না? আর টাকা তছরুপ কেমন করে হবে? আমাদের তো প্রত্যেক বছর অডিট হয়। সমস্ত টাকার হিসেব আমাদের হাতে আছে। আর আমাদের দলে মহিলাদের খুব সম্মান করা হয়। পুরুষ সদস্যরাই সেট বয়ে নিয়ে যায়। একটা ঘটনা বছর খানেক আগে ঘটেছিল, কিন্তু তার জন্য তো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল।'

আগামী ৩০ এপ্রিল থেকে ২ মে বহুরূপীর উৎসব হওয়ার কথা। কিন্তু যে নতুন নাটক উৎসবে হওয়ার কথা ছিল, সেই 'অমলকান্তি ও রোদ্দুর'-এর কাজ আপাতত বাতিল করা হয়েছে।

চূড়ান্ত প্রাপ্তমনস্কদের জন্যে নাটক এবার শহরে! সূর্য সেন কে?

$
0
0

এই সময় বিনোদন ডেস্ক: দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় ছোট ছোট পোস্টার দেখতে পাবেন, যদি আপনার চোখ সজাগ হয়। সাদা কাগজে কালো কালি দিয়ে লেখা সূর্য সেন কোথায়? ভোটের আগে আপনি হয়তো ভাবছেন এ আবার কী...হঠাৎ কেন সূর্য সেনের খোঁজ পড়ল? আসলে এই লাইনটি হল একটি নাটকের টিজার। ইচ্ছেমতোর পঞ্চম জন্মদিনে আসছে ঘুম নেই। উৎপল দত্তর এই নাটকটির নতুন ভাবে নাট্যরূপ দিয়ে সাজিয়েছেন সৌরভ পালোধী। ঘুম নেই সমাজের সেই শোষিত নিপীড়িত মানুষদের কথাই বলে। দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক শ্রেণি, একচিলতে ঘরে কোনও মতে চলে জীবন সংগ্রাম। এই নাটকের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ট্রাক ড্রাইভার ও ধাবার কর্মীদের রাজনৈতিক ইস্তেহার। একদিন রাতে সেখানেই খবরের খোঁজে আসে দুই সাংবাদিক। সেখানে এসে তারাও দেখে, শুধু তারাই নয়... এভাবে জীবনসংগ্রামে রত হয়েছেন বহু মানুষ। হাতে হাত মিলিয়ে শুরু হল লড়াই। অপেক্ষা নতুন সূর্যের।
69043739

এই সময়ে দাঁড়িয়ে চূড়ান্ত বাস্তব একটা নাটক। নাটকের মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। নাটকের পরতে পরতে রয়েছে শ্রেণি সংগ্রাম। পরিচালক সৌরভ পালোধীর কথায়,'চারিদিকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পালাবদল দেখেই এই নাটকের সিদ্ধান্ত। নাটকের সংলাপ এবং চলও সেই ভাবেই করা। তাই আমাদের এই নাটক কঠোর ভাবেই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। সংলাপে এমন কিছু ভাষার ব্যবহার আছে যেখান থেকেই এই সিদ্ধান্ত আমাদের।'
69044070

ইচ্ছেমতোর এবারের প্রযোজনায় অভিনয় করছেন কৌশিক কর। কৌশিক এবং সৌরভ বহুদিন ধরেই একে অপরের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। ঘুম নেই তে সঙ্গীতের যাবতীয় সামলাচ্ছেন দেবদীপ মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও এই নাটকের পুরোটাই লাইভ মিউজিক। আগামী ১০ মে অ্যাকাডেমিতে ঠিক সন্ধে ৬.৩০-এ এই নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন।

স্ট্রিন্ডবার্গের নাটকে প্রথমবার একসঙ্গে দেবশঙ্কর-শুভাশিস

$
0
0

ইন্দ্রনীল শুক্লা

আজকের কথা নয়। সেই ১৮৮৭ সালে 'দ্য ফাদার' লিখেছিলেন অগস্ট স্ট্রিন্ডবার্গ। সেই নাটকই এবার সমসময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আসতে চলেছে বাংলা মঞ্চে। এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে স্ট্রিন্ডবার্গের নাটকের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে। বলা হয়, নারী মনের ভিতরকার অন্ধকার দিকগুলো বার বার উঠে এসেছিল তাঁর নাটকে- মা সন্তানের জন্ম দেন। তিনিই কেবলমাত্র জানেন সন্তানের পিতা কে। পুরুষ কিন্তু চাইলেও সত্যের খোঁজ পান না। হতে পারে, পরবর্তীকালে গৃহস্থ পরিবেশে মানুষ মোটামুটি ধরে নেন অমুক সন্তানের পিতা তমুক। কিন্তু কোনও নারী যিনি সকলের অজান্তে বহুগামী, তাঁর সন্তানের জন্মদাতা কে সেটা তো অন্ধকারেই। হতে পারে আজকের বিজ্ঞানে পিতার পরিচয় জেনে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু সেও তো যথেষ্ট জটিল এক প্রক্রিয়া। যদি পারস্পরিক বিশ্বাস কিংবা সম্পর্কের ভিতটা ভিতরে ভিতরে কোথাও টলে গিয়ে থাকে? তাহলে তো এমনকী নারীর ইপ্সার শিকার হতে পারেন কোনও পুরুষও! তেমনটিই কিন্তু ঘটে 'দ্য ফাদার'-এ। আর এই ব্যতিক্রমী প্লট আশ্রয়েই ঈশিতা মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় উষ্ণীক নাট্যগোষ্ঠী তৈরি করছে 'বাবাই'।

সরলরেখায় না চলা, জটিল মনস্তত্ত্বের উপর অবস্থিত এই নাটকের যথার্থ রূপ দিতে প্রথমবার একসঙ্গে মঞ্চে আসছেন দেবশঙ্কর হালদার আর শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়। তাঁরা রয়েছেন যথাক্রমে দীপঙ্কর বসু এবং ডক্টর সামন্ত-র ভূমিকায়। প্রবীণ অভিনেত্রী ছন্দা চট্টোপাধ্যায়ও রয়েছেন একটি বিশেষ ভূমিকায়। অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন অরুণিতা দে, প্রবীর দত্ত, সপ্তর্ষি ভৌমিক প্রমুখ। ঈশিতা-র থেকে জানা গেল নাটকটির স্থানীকরণ করা হয়েছে। ঘটনার প্রেক্ষাপট সরিয়ে আনা হয়েছে পুরুলিয়ায়। তাঁর মতে, 'এই সময়ে দাঁড়িয়েও অন্য রকম তাৎপর্য রয়েছে এ নাটকের।' উল্লেখ করা দরকার, এর আগে ঈশিতার পরিচালনায় 'কাল্লুমামা' নাটকে কাজ করেছিলেন দেবশঙ্কর। সে নাটক যথেষ্ট মঞ্চসফল। একটি সাধারণ ছেলে কেমন করে হয়ে উঠল মাফিয়া-ডন, নানা রকম ঘটনার ওঠা-পড়া, সাফল্য-হতাশার সেই জার্নিটাই ছিলে নাটকে উপজীব্য। সে প্রসঙ্গ তোলায় ঈশিতা বলেন, ''কাল্লুমামা' আর 'বাবাই' আলাদা ধারার নাটক। ওখানে দেবশঙ্কর একক অভিনয় করতেন। এ নাটক তা নয়। এখানে অনেকগুলো চরিত্র এবং প্রতিটি চরিত্রের মধ্যেই জটিলতা রয়েছে। সেটাই ধরা পড়ছে নাটকের মধ্যে।' দেবশঙ্কর বলেন, 'আমার চরিত্রটার মধ্যে অনেকগুলো ইন্টারেস্টিং লেয়ার রয়েছে। ধীরে ধীরে মনের সেসব স্তরগুলো প্রকাশ পাবে নাটকে, যা আগে থেকে বলে দেওয়া ঠিক হবে না।' শুভাশিস আরওএক ধাপ এগিয়ে বলেন, 'নাটকটার মধ্যে জটিলতা অবশ্যই রয়েছে, এবং সেটাই আমায় আকৃষ্ট করেছে। দেবশঙ্কর আর আমি এই প্রথম একসঙ্গে মঞ্চে আসছি। দর্শকদের নিশ্চয়ই ভালো লাগবে।'

অতদিন আগে স্ট্রিন্ডবার্গের লেখা নাটকটি বাংলার প্রেক্ষাপটে কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ হল, প্রথমবার মঞ্চে একসঙ্গে দেবশঙ্কর-শুভাশিস ম্যাজিকই বা কতখানি জমলো তা দেখতে অপেক্ষা সামান্যই। আগামী ১৭ মে প্রথমবার নাটকটি মঞ্চস্থ হতে চলেছে অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহে।

Viewing all 222 articles
Browse latest View live


<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>