Quantcast
Channel: Eisamay
Viewing all articles
Browse latest Browse all 222

সোফায় হোমস, পর্দায় সত্যজিত্

$
0
0

নাটক: হোমসের দাদাগিরি

প্রযোজনা: গোবরডাঙা শিল্পায়ন

নাটক, নির্দেশনা: আশিস চট্টোপাধ্যায়

অভিনয়: দীপা ব্রহ্ম, প্রিয়েন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহেব আলি মন্ডল, প্রসূন মু্খোপাধ্যায়, দেবপ্রিয় পাল, শৌভিক সরকার প্রমুখ

শার্লক হোমসের হাতে এসে পড়ল একটি জটিল কেস। আর তার সমাধানে পাইপ ধরিয়ে বসে পড়লেন তিনি। শুরু হল কেসের তদন্ত। একটা সময় এল সমাধান। এই নিয়েই একটি নাটক। হোমসের নাম শুনলে গোয়েন্দা কাহিনি প্রিয় বাঙালি চিরকালই শিরদাঁড়া সোজা করে বসে৷ তাই এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না আন্দাজ করা যায়৷ কোন গল্প থেকে এই নাটক তৈরি করা হয়েছে, গপ্পোটা কেমন ছিল, সেসব দিকে আগে যাচ্ছি না৷ বরং চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক শার্লক হোমস বলতে আমাদের সামনে যা যা ভেসে ওঠে, সেই সবকিছুর দিকে৷

আসলে শার্লক হোমসের পুরো চেহারাটা পেতে হলে, ফ্লেভারটা চাখতে হলে তো কেবলমাত্র একটি গল্প বা উপন্যাস পড়ে বোঝা সম্ভব নয়৷ কারণ, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই প্রাইভেট ডিটেকটিভের চরিত্রটির ব্যান্তি, বৈচিত্র ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য লেখার পাতায় পাতায়৷ হোমস মানে কেবল একজন বিচ্ছিন্ন গোয়েন্দা তো নয়৷ হোমস মানে লন্ডন শহর, সে শহরের কুয়াশা, বৃষ্টি, আর আবছায়ায় ঢাকা রহস্য৷ হোমস মানে পাইপ, ড্রেসিং গাউন, লং কোট৷ হোমস মানে বেহালা বাদন, ম্যানড্রেক হ্যাট, ছাতা, লাঠি, ফায়ার প্লেস, পিস্তল, আতস কাঁচ৷ এই সবকিছু মিলেই গড়ে ওঠা হোমসিয়ানায় আচ্ছন্ন হই আমরা৷ এই আনুষাঙ্গিক হোমসীয় মেজাজটা ধরা পড়ল আশিস চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত এই নাটকটিতে৷ ছোট ছোট টুকিটাকি প্রপস, ঘরের আসবাব, একটুকরো গানের ফিরে ফিরে আসা, সঙ্গে নাচ, আলো-ছায়ার খেলা ইত্যাদি মিলে হোমসের সময়টাকে ধরতে পারা যায়৷ এইসব অংশের কথা সাধারণত নাটকের আলোচনায় শেষের দিকে আসে৷ কিন্ত্ত এক্ষেত্রে কথাগুলো গোড়াতেই বলা প্রয়োজনীয় মনে হল, কারণ গোয়েন্দা গল্পে মেজাজটাই কিন্ত্ত আসল রাজা!

ডয়েলের একটা ছোটগল্প 'আ কেস অফ আইডেন্টিটি' অবলম্বনে এই নাটক রচিত হয়েছে৷ গল্পের চলন মোটামুটি একই রকম রাখা হয়েছে৷ অর্থলোলুপ ডঃ উইন্ডিব্যাঙ্ক বয়স্কা মহিলা লুসিকে বিবাহ করেন স্রেফ টাকা হাতানোর জন্য৷ এদিকে লুসির একটি মেয়ে রয়েছে৷ মিস মেরি সাদারল্যান্ড নামে সেই মেয়েটির নামে তার কাকা সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন৷ এ টাকার বিপুল সুদ সত্ বাবা দিব্যি ভোগ করছে৷ কিন্ত্ত মেয়েটি হঠাত্ বিয়ের জন্য ক্ষেপে উঠল৷ টাকা হাতছাড়া হয়ে যাবে এই চিন্তায় প্রথমে বিয়ে দিতে অরাজি হলেও পরে সত্বাবা-মা রাজি হয়ে গেলেন৷ নিজেরা বিয়ের পাত্রও যোগাড় করে ফেললেন৷ কিন্ত্ত একসময়ে সে পাত্র বেপাত্তা! হলটা কী? সে রহস্যের জট খুলবে নাটকে৷

লুসির ভূমিকায় দীপা ব্রহ্ম ভাল অভিনয় করলেন৷ হোমসের চেনা গালভাঙা চেহারা সঙ্গে অদ্ভুত মিল পাওয়া গেল শৌভিক সরকারের৷ পরিচালক আশিস চট্টোপাধ্যায় একটা অন্য রকমের থিয়ে-মুহূর্ত তৈরি করেছেন যা আলাদা করে উল্লেখ করা একান্তই প্রয়োজন৷ নাটকে দেখা যায় পাইপ টানতে টানতে পর্দায় সত্যজিত্ রায়ের কথা মন দিয়ে শুনছেন হোমস৷ সত্যজিত্ বলছেন, তিনি ফেলুদা চরিত্রটি তৈরির সময়ে কেমনভাবে হোমস চরিত্রটির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন৷ আর শুনে মুচকি হাসছেন হোমস! পরিচালক হিসেবে বারবারই নতুন নতুন বিষয় ও চরিত্রকে নিয়ে কাজ করেছেন আশিস৷ তাঁর নাটকে আমরা মার্কেজকে (কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না) পেয়েছি, তাঁর নাটকে লালন ফকির এসেছেন, কখনও বা চে গুয়েভারার সঙ্গে মিশে গিয়েছেন চৈতন্যদেব, আর এ বার সত্যজিতের থেকে ফেলুদা প্রসঙ্গ শুনলেন হোমস! ---ইন্দ্রনীল শুক্লা


Viewing all articles
Browse latest Browse all 222

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>